সমুদ্র যেখানে সঙ্গীতময়
সত্যিই সমুদ্র যেখানে সঙ্গীতময়- সেখানেই চলে এসেছি। অনেক গল্প শুনেছি তার। কিš‘ু নিজ চোখে দেখার পর মনে হল অন্ধকারেই ছিলাম এতদিন। কবি হলে হয়তো লিখে ফেলতো সমুদ্রবন্দনাকাব্য। আমার বন্ধু কিবরিয়ার মনে যে ছন্দ দেখলাম, তা আমাকে ভাবিয়েছে। ও বেরসিক তা কিš‘ু নয়। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাবার নয়। এখানে সত্যি সত্যিই এসে ওর মনের পরিবর্তন কিছুটা ঘটেছে। নীল আকাশের নিচে সমুদ্রতটে সুন্দরীদের আনাগোণা আর ঝিরঝিরে বাতাসে মনে দোল খাওয়াই ¯^াভাবিক। বলছি সন্তোষার কথা। উঠেছি সন্তোষা রিসোর্টে। সে কি আতিথেয়তা, একেবারেই মন ভরে গেল।
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে দেখলাম সুন্দর, ছিমছাম। মনে হলো সাজানো গোছানো কংক্রিটের এক দ্বীপ যেন। ¯’াপত্য শিল্পের অত্যাধুনিক নমুনা। খুবই সুন্দর ঝকঝকে পথ, দু’ধারে একই মাপের বড় বড় গাছ ছাতার মতো ছায়া দি”েছ। নিচে বাহারি রঙের ফুল গাছ। সারি সারি ফুল গাছকে ছায়া দি”েছ বড় গাছগুলো। গাইড কাম ড্রাইভার বললো, এগুলোর নাম রেনট্রি।
সন্তোষাতে ঢোকার মুখে গাড়ি থামলো এক চেকপোস্টে। তারপর আবার গাড়ি চললো। জানলাম, এখানে হোটেল বুকিং-এর কাগজ দেখানোটা অত্যন্ত জরুরি। পরিচয়পত্রও এরা দেখে।
পাঁচতারা বিলাসবহুল হোটেলের সামনে, গাড়ি থেকে নামতেই দেখি অতিথি আপ্যায়নের জন্য প্র¯‘ুত কয়েকজন। সাজুগুজু করে আছে কয়েক তরুণী। একজনের পরণে শাড়ি। এখানে প্রথম কাউকে শাড়ি পরা দেখলাম। গায়ের রঙ উজ্জল শ্যামলা। বাঙালি না হলেও মনে হলো ভারতীয় হতে পারে। কিš‘ু শাড়ি আর সাজে তাকে এমনই লাগছিল যে, পরিচিত মন্ডলেরই সদস্য একজন।
এগিয়ে এলো মালা দিতে। আমাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দিল। কেউ কেউ ফুলের পাপড়ি ছিটালো। শরবত আর সঙ্গে স্ন্যাকস এগিয়ে দিল।
ব্যাগপত্র পৌঁছে গেল হোটেলে কক্ষে। ঢুকতেই দেখি আভিজাত্যের ছাপ, হোটেল কক্ষ সাজানো হয়েছে, নাকি সবসময়ই এমনি থাকে, বুঝতে পারি না।
হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছলাম স্যালভাদোর দালির ভাস্কর্য এলিফ্যান্ট ও আদম-ইভের মূর্তির কাছে। আর ঠিক বাইরে রদ্যাঁর ‘দ্য থিঙ্কার’-এর প্রতিমূর্তি। এর পাশ দিয়ে এস্কালেটরে উপরে উঠেই মারলায়ন সিংহ ও মাছের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন। অন্ধকার গুহার এক পাশ দিয়ে বয়ে যা”েছ জলের ধারা। অন্য পাশে, উপর থেকে ঝোলানো আছে ড্রাগন ও মৎস্যকন্যাদের মূর্তি। ঘুটঘুটে অন্ধকারে আলোর কারসাজিতে একটা ড্রাগনের লাল চোখ শুধু দেখা যা”েছ!
Post a Comment